শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ১১:০৯ পূর্বাহ্ন
আমার সুরমা ডটকম ডেক্স : মঙ্গলে কী পানি আছে? দীর্ঘদিন ধরেই এই প্রশ্ন ভাবিয়েছে জ্যোতির্বিজ্ঞানীদের। পানির অস্তিত্বের সন্ধানে লাল গ্রহে অর্বিটার, রোভার্সের মতো যন্ত্র পাঠিয়ে প্রচুর পরীক্ষা-নিরিক্ষা চালিয়েছে মানুষ। অবশেষে সব প্রশ্নের জবাব হয়ত খুব শীঘ্রই সামনে চলে আসবে। অন্তত এমনটাই মনে করছেন বিজ্ঞানীদের দল।
সম্প্রতি, মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থার (নাসা) তরফে জানানো হয়েছে, মঙ্গলের মাটির নীচে একটি বিশালকায় জমে যাওয়া বরফের চাঁই রয়েছে। সেই বরফের স্তর অন্তত ১৩০ ফুট পুরু। আর দৈর্ঘ্য! মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফর্নিয়া ও টেক্সাসকে মেলালে যত বড় আয়তন হবে, প্রায় তার সমান।
কিন্তু, বিজ্ঞানীরা এত নিশ্চিত হচ্ছেন কী করে? জানা গিয়েছে, সম্প্রতি নাসার মার্স রিকনিসেন্স অর্বিটার (এমআরও) এমন কিছু তথ্য পাঠিয়েছে, যা বিজ্ঞানীদের ভাবিয়ে তুলেছে। নাসার তরফে জানানো হয়েছে, মঙ্গলের কক্ষপথে ঘুরতে ঘুরতে লালগ্রহের একটি বিশেষ অঞ্চলে (আর্কাডিয়া প্ল্যানিশিয়া) নজরদারি চালাচ্ছিল এমআরও। সেইসময় অর্বিটারের শক্তিশালী ক্যামেরায় ধরা পড়ে কিছু বিশেষ ছবি।
দেখা যায়, সেখানে ভূপৃষ্ঠের ওপর তৈরি হওয়া ক্রেটার বা গর্তগুলির চরিত্র অন্যদের থেকে আলাদা। ওই অঞ্চলের গর্তগুলির আকার বাটির মতো নয়, তা অনেকটাই চ্যাপ্টা। এখান থেকেই বিজ্ঞানীরা বুঝে যান যে ভূপৃষ্ঠের নীচে এমন কিছু আছে যা ক্রেটারগুলির চরিত্র পাল্টে দিয়েছে।
কাজে লেগে পড়ে নাসার যান। ওই ক্রেটারগুলির গভিরতা মাপার জন্য এমআরও-তে লাগানো হাই-রেসোলিউশন ইম্যাজিং সায়েন্স এক্সপেরিমেন্ট (হাই-রাইস) ক্যামেরা ব্যবহার করে ওই অঞ্চলের থ্রি-ডি বা ত্রিমাত্রিক মডেল তৈরি করা হয়। এরপর, এমআরও-তে লাগানো শ্যালো রেডার (শারাড) যন্ত্র থেকে রশ্মি মাটির নীচে পাঠিয়ে সেখানকার চরিত্র নির্ণয় করা হয়।
সব তথ্যকে একত্রিত করে বিজ্ঞানীরা সিদ্ধান্তে আসেন যে মাটির স্তরের (রেগোলিথ) নীচে প্রচুর পরিমাণে বরফ রয়েছে। আর সেই বরফ হয়েছে পানি থেকেই। কিন্তু কী করে এল এত বরফ? বিজ্ঞানীদের অনুমান, প্রায় কোটি বছর আগে বিস্তর তুষারপাতের ফলে এই বরফের স্তর তৈরি হয়েছিল। বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, বিগত কয়েক কোটি বছরে মঙ্গলের আবহাওয়া ও জলবায়ুর মারাত্মক বদল এসেছে। যার ফলে, একসময় পানি-বরফে মোড়া মঙ্গলের মাটি আজ রুক্ষ্ম ও প্রাণহীন হয়ে পড়েছে। সূত্র: আনন্দবাজার